দখল-দূষণে রংপুরের শ্যামাসুন্দরী খালের এ কী হাল!

মোঃ সুজা উদ্দিনঃ

রংপুরের শ্যামাসুন্দরী

দেশের উত্তরের জেলা শহর রংপুরের শ্যামাসুন্দরী খাল এক সময় নগর বাসীর লাইফলাইন ছিল।দখলদারদের দখল, গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রাচীনতম ও রংপুরের দীর্ঘতম এই খাল এখন আতি সরু নালায় পরিণত হয়েছে। যে খালটি পরিবেশ রক্ষার জন্য খনন করা হয়েছিল তা এখন পরিবেশ দূষণের এক বিশাল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন।
রংপুর নগরের  উপর দিয়ে বয়ে চলা শত বছরের পুরনো শ্যামাসুন্দরী খাল এখন মৃতপ্রায়।
বর্ষার সময় এই খালটি রংপুর শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি বড় মাধ্যম। কিন্তু বৃষ্টি হলেই রংপুর শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। স্থানীয়রা মনে করেন, যদি শ্যামাসুন্দরীর পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা যায়, তাহলে  রংপুর শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে না। 
স্থানীয়দের অভিযোগ দখল,দূষণ,দুর্গন্ধ আর মশা উৎপাদনের জায়গায় পরিণত হয়েছে খালটি।
রংপুর সিটি করপোরেশনের সহ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (অঞ্চল-১) মো. মিজানুর রহমান জানান, খালটি বছরে দুইবার করে পরিষ্কার করা হয়। মশার বিস্তার রোধে করা হয় স্প্রে।
শ্যামাসুন্দরী খাল রক্ষায় জনসাধারণকেও সচেতন হওয়ার তাগিদ এই কর্মকর্তার। তিনি বলেন, আমরা খালে বর্জ্য না ফেলার জন্য সচেতন করি। মাইকিং করি। তবুও দেখা যায়, মানুষ এখানে ময়লা ফেলছে।
শ্যামাসুন্দরীতে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে এনে খালটি রক্ষা করার দাবি জনান সচেতন স্থানীয় মহল।
মুলত, শ্যামা সুন্দরী খাল বাংলাদেশের রংপুর শহরে প্রবাহিত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি কৃত্তিম খাল।এই খালটি ১৮৯০ সালে খনন করা হয়। খালটি রংপুর নগরীর সিও বাজার এলাকার ঘাঘট নদীর উৎসমূখ থেকে শুরু হয়ে খোখসা ঘাঘটের সাথে মিলেছে।
রংপুরের জমিদার চৌধুরাণী শ্যামা সুন্দরী দেবীর (দেবী চৌধুরাণী) পুত্র রাজা জানকীবল্লভ সেন। তিনি রংপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন ১৮৯২-১৮৯৪ ইং পর্যন্ত। তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ১৮৯২ সালে তাঁর বাগান বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয় রংপুর পৌরসভা ভবন।  রাজা জানকী বল্লভ সেন ছিলেন অনারারী ম্যাজিস্ট্রেট, লোকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা বোর্ডের সদস্য। ১৮৯১ সালে তিনি রাজা উপাধিপ্রাপ্ত হন। তার মায়ের মৃত্যু ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হয়।রংপুর শহরে মশার উপদ্রব ঠেকাতে তিনি "শ্যামা সুন্দরী খাল" খনন করেন

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন