শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন।

 উত্তরবাংলা ২৪বিডি ডেস্ক:

 



প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ১টি ফ্লাইট (বিএ ১৫৯৩) লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে চার ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর ১৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা ৪২ মিনিটে (নিউইয়র্ক সময়) নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী কর্মচারী মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে সম্ভাষণ জানান।

এছাড়া আওয়ামী লীগ ও এর কর্মী সংগঠনের নেতারাও প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী তার সাথে তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী উড়োজাহাজ বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সকাল বেলা ১০টা ১২ মিনিটে(বাংলাদেশ সময়) নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করে।

যাত্রা রাস্তায় প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ ফ্লাইটের প্রত্যেকটি অংশ ঘুরে দেখেন তার সাথে যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী ১৭ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অবস্থানকালে ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দফতরের সাধারণ পরিষদ হলে ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ১ম দিনের উচ্চ-পর্যায়ের সাধারণ আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি ২২ সেপ্টেম্বর (স্থানীয় সময়) দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে উক্তি দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী ১৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত নৈশভোজেও যোগ দিবেন।

সাধারণ পরিষদের সভায় যোগদানের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা  তার সাথে জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই অগ্রগতি লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), সর্বজনীন শরীর ও অর্থসহ বেশ কয়েকটি উত্তম পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় ও সৌজন্যমূলক বৈঠকে অংশ নেবেন।

এরআগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘সাধারণ বিতর্কে প্রধানমন্ত্রী তাঁর উক্তিতে বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য উন্নয়ন, অগ্রগতি, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য খাতে সাফল্যের পাশাপাশি জগৎ শান্তি, নিরাপত্তা, নিরাপদ অভিবাসন, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু ও ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরবেন।’

বিশ্ব নেতারা ৭৮তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য নিউইয়র্কে একত্রিত হচ্ছেন। ইন্টারন্যাশনাল এই সম্মেলনে এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে-‘আস্থা পুনর্গঠন ও পৃথিবী সংহতির পুনরুদ্ধার : সবার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্ব ত্বরান্বিত করার জন্য ২০৩০ এজেন্ডা এবং এর টেকসই অগ্রগতি লক্ষ্য বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ। ’

প্রধানমন্ত্রী ১৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের রকফেলার সেন্টারে ইউএনআইডিও ও ডেলয়েট আয়োজিত ‘খাদ্য ভাবনা- অন্ন যোগাড় চেইন আবিষ্কারে এসডিজিকে ত্বরান্বিত করার সহযোগিতা’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনে নিমিত্ত বক্তব্য উপস্থাপন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

একই দিনে তিনি ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে ‘এসডিজি সামিট-লিডার্স’ ডায়ালগ ৪ (এসডিজি অর্জনের জন্য সমন্বিত নীতি ও পাবলিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা) শীর্ষক আরেকটি সম্মেলনেও ভাষণ দেবেন।

সন্ধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কের লেক্সিংটন ভেন্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিবের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত ও বিশ্ব দেহ অর্থায়নের জন্য জগৎ দেহ সংস্থার দূত গর্ডন ব্রাউন এবং গ্লোবাল বিজনেস কোয়ালিশন ফর এডুকেশনের এক্সিকিউটিভ চেয়ার সারাহ ব্রাউন আয়োজিত জাতিসংঘ ২০২৩ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অগ্রভাগ সম্মেলন উপলক্ষে দেয়া ১টি উচ্চ-পর্যায়ের পার্সোনাল নৈশভোজে যোগ দেওয়ার জন্য পারেন।

প্রধানমন্ত্রী ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দফতরে সিআর-১৬-তে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সভাপতির ‘টুওয়ার্ডস এ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক একটি উচ্চ-পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকেও কথন দেবেন।

একই দিন শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দফতরে সিআর-১১তে বাংলাদেশ, অ্যান্টিগা তার সাথে বারবুডা, ভুটান, চীন, মালয়েশিয়া, চ্যাথাম হাউস তার সঙ্গে সুচনা ফাউন্ডেশনের যৌথ ব্যবস্থায় সার্ভিস পরিষেবা ভিত্তিক কমিউনিটি হাসপাতালের একটি উচ্চ-পর্যায়ের সাইড ইভেন্টেও যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী ২০ সেপ্টেম্বর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে ‘টেকসই উন্নয়নে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য ইন্টারন্যাশনাল গণ অর্থায়ন বৃদ্ধি তার সাথে দক্ষতা নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক উন্নয়ন অর্থায়ন (এফএফডি) ব্যপারে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে একটি উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনায় উৎকৃষ্ট পাঠক হিসেবে বচন দেবেন।

একই দিনে উনি মহাসচিবের ক্লাইমেট অ্যামবিশন সামিট, মহামারী প্রতিরোধ, প্রিপারেশন ও প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত শ্রেষ্ঠ পর্যায়ের বৈঠক, রমণী নেতৃবৃন্দের জাতিসংঘ প্লাটফর্মের বার্ষিক সভা, ক্লাইমেট অ্যামবিশন সামঞ্জস্যপূর্ণ পরম ভালো পর্য়ায়ের জলবায়ু বিষয় কেন্দ্রিক সম্মেলনের পাশাপাশি ন্যাশনাল জুরিসডিকশনের বাইরের এলাকার সামুদ্রিক  বৈচিত্র্য আইনের উপর জাতিসংঘের কনভেনশনে যোগ দেবেন।

তিনি ২১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ, কানাডা, গাম্বিয়া,মালয়েশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য তার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের সাইড ইভেন্টের একসাথে ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে সৃষ্ট হুমকি মোকাবেলা’ শীর্ষক প্রাত:রাশ সম্মেলন তার সঙ্গে ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ নিয়ে শীর্ষ পর্যায়ের অধিবেশনে যোগ দেবেন।

সফরকালে জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার, জাতিসংঘ মহাসচিবের জেনোসাইড উপদেষ্টা, নবনির্বাচিত ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) মহাপরিচালক, বিশ্ব দেহ সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তার সাথে ইন্টারন্যাশনাল পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন তার সাথে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের সাথে জাতিসংঘ সদর দফতরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।  

এসব অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া শেষে প্রধানমন্ত্রী ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল বেলা ৯ টায় (নিউ ইয়র্ক সময়) ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে নিউইয়র্ক ছেড়ে করবেন। উনি ২৩ হতে ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে অবস্থান করবেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী ২৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ১টি ফ্লাইটে (বিএ-২৯২) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে (ওয়াশিংটন সময়) লন্ডনের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করবেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল বেলা বেলা ১১টায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।

বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাজ্যে নিয়োজিত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম।

প্রধানমন্ত্রী ৩ অক্টোবর রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (লন্ডন সময়) আকাশযান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (বিজি ২০৮) ১টি ফ্লাইটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং ৪ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১২টায় (বাংলাদেশ সময়) হযরত শাহজালাল ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।

(তথ্য সূত্র সংগ্রহীত)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন