উত্তর বাংলা ২৪বিডি ডেস্কঃ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অসুস্থ বাবা-মায়ের চিকিৎসার ব্যয় জোগাতে রিকশা চালাচ্ছেন ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্র, যে বয়সে লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করার কথা,সেই বয়সেই বাবা-মায়ের চিকিৎসা ও সংসারে হাল ধরতে রিকশা চালাতে হচ্ছে শিমুলবাড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া আমিনুল ইসলাম কে।
আমিনুল ইসলামের বাসা উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের কুড়ারপাড় এলাকায়। চার শতাংশ ভূমির ওপর জরাজীর্ণ ১টি বাড়িতে থাকে আমিনুলের পরিবার।আমিনুল ইসলামের জন্মদাতা আব্দুল করিম মিয়া(৫৩) প্রায় ১ বছর আগে স্টক করে হাত পা অবশ হয়ে গেছে, খুব একটা ভালো করে কথা বলতে না পারলেও কোনভাবে লাঠির ওপর ভর দিয়ে চলাফেরা করেন। মা কবিজন বেগম(৪৫) প্রায় ৭/৮ বছর হতে টিউমার রোগে আক্রান্ত। টাকা পয়সার অভাবেই সঠিক চিকিৎসা করতে পারছেন না তারা, বয়স কম হওয়ায় অনেকেই আমিনুলের রিকশায় সহানুভূতি দেখিয়ে উঠলেও এলাকার নানারকম জায়গায় সারাদিন রিকশা চালিয়ে যে দুই তিনশো টাকা আয় করে তা দিয়ে বাবা-মায়ের ওষুধের টাকা জোগাড় হলেও মাঝে মাঝে খাদ্য কেনার টাকা থাকে না আমিনুলের। এজন্য সরকার ও সমাজের বৃত্তবান দানশীল ব্যক্তির নিকট বাবা-মায়ের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন অসহায় ছাত্র আমিনুল ।
এলাকাবাসী জহুর আলী, জরিনা বেগম জানান, পরিবারটি অনেক অসহায়,প্রচুর কষ্ট করে চলে। সংসারে আয় উপার্জন করার কোন না থাকায় ছোট্ট শিশু আমিনুল রিকশা চালিয়ে পরিবারটি চালাচ্ছে ও তার বাবা-মায়ের চিকিৎসা করছে।
আমিনুলের মা কবিজন বেগম জানান,আমরা দুই স্বামী-স্ত্রী খুবই অসুস্থ ও অসহায়,আমার এক ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় গিয়ে কামাই করে নিজের পেট চালায়। আমাদের কোন সাহায্য করতে পারে না। ছোট্ট পোলা আমিনুল লেখাপড়ার পাশাপাশি রিকশা চালিয়ে আমাদের চিকিৎসার খরচা চালায়। সরকারি কোনো সাহায্য পেলে আমাদের চিকিৎসাটা অনেক ভালো হতো আমার স্বাভাবিক জীবনে হয়তো ফিরে আসতে পারতাম।
আমিনুলের রিকশার রেগুলার যাত্রী নয়ন ও আজিজ জানান, আমিনুলের বাবা-মা খুব অসুস্থ এইজন্য সহানুভূতি করে আমরা ও রিকশায় উঠি।
আমিনুল ইসলাম জানান বাড়িতে ভীষণ অভাব মা বাবা প্রচুর অসুস্থ এজন্য বাধ্য হয়ে বাবা মার চিকিৎসার লেখাপড়ার পাশাপাশি রিকশা চালাই। বাবা-মায়ের চিকিৎসার জন্য দানশীল লোক ও সরকার সাহায্য করলে লেখাপড়াটা বেশ ভালো করে চালাতে পারতাম।
ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ হারুন জানান , আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি পরিবারটি খুবই অসহায়, বাবা মায়ের চিকিৎসার জন্য আমিনুল নামের ছেলেটি লেখাপড়া বাতিল দিয়েই রিকশা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলামের জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন দিলে সমাজসেবা অধিদপ্তর সর্বোচ্চ দিয়ে ব্যবস্থা নেবে ।
(তথ্য সূত্র সংগ্রহীত)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন