মিঠাপুকুরে মাত্র ৬ মাসেই কোরআনের হাফেজ শরিফুল, এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।



মাত্র ছয় বছর বয়সে বাবাকে হারানোর পর যখন শরিফুল ইসলামের পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল, ঠিক তখনই তার জীবনে আলোর দিশারী হয়ে এলেন দারুত তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার পরিচালক মুফতী হাসান আহমেদ আফেন্দী। তার ব্যক্তিগত সহায়তায়, মাত্র ১৩ বছর বয়সী শরিফুল ছয় মাসের অবিশ্বাস্য সময়ে পবিত্র কোরআন মাজিদ সম্পূর্ণ হিফজ (মুখস্থ) করে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের ঈদুলপুর গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের পুত্র শরিফুল ইসলামের জীবন দারিদ্র্য ও প্রতিকূলতায় ভরা ছিল। বাবার মৃত্যুর পর তার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। কিন্তু শরিফুলের মেধা ও কোরআন শিক্ষার প্রতি তার অদম্য স্পৃহা লক্ষ্য করেন মুফতী হাসান আহমেদ আফেন্দী। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠিত দারুত তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার পরিচালক হিসেবে তিনি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে শরিফুলের পড়ালেখার দায়িত্ব নেন।

মুফতী হাসান আহমেদ আফেন্দীর এই মহানুভবতার ফলস্বরূপ মেধাবী শরিফুল অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে। মাত্র ছয় মাসের মধ্যে সে পবিত্র কোরআন মাজিদ হিফজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে হাফেজ শরিফুল ইসলাম উপজেলার জায়গীরহাট পুরাতন গরুহাটি সংলগ্ন দারুত তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার একজন ছাত্র।

শরিফুলের এই অসাধারণ অর্জন মাদ্রাসা এবং এলাকার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। তার এই সাফল্যে এলাকাবাসী উচ্ছ্বসিত এবং তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দোয়া করছেন। তারা আশা করছেন, শরিফুলের এই ঘটনা নিঃসন্দেহে অনেক শিক্ষার্থীকে অনুপ্রাণিত করবে।
দারুত তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার পরিচালক মুফতী হাসান আহমেদ আফেন্দী শরিফুলের সাফল্যে অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি বলেন, "আমি শরিফুলের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তার এই সাফল্যে দারুত তাকওয়া মডেল মাদ্রাসার নাম উজ্জ্বল হয়েছে। আমি তার সর্বোচ্চ উন্নতি কামনা করছি।

শরিফুলের এই ঈর্ষণীয় সাফল্য প্রমাণ করে যে, সুযোগ ও সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে যেকোনো প্রতিকূলতা জয় করা সম্ভব। তার এই অর্জন বাংলাদেশের ধর্মীয় শিক্ষাক্ষেত্রে এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে এবং অসংখ্য তরুণকে কোরআনের পথে অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা করা যায়।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন