রংপুরের কৃষকের আর্তনাদ: অতিবৃষ্টিতে সর্বস্বান্ত মাঠের সোনালী স্বপ্ন!


রংপুরের দিগন্তজোড়া মাঠজুড়ে এখন শুধুই বিষাদের প্রতিচ্ছবি। প্রকৃতির রুদ্ররূপ কেড়ে নিয়েছে কৃষকের মুখের হাসি, ভাসিয়ে দিয়েছে তাঁদের সোনালী স্বপ্ন। টানা কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি এবং আকস্মিক বন্যায় রংপুরের কৃষিনির্ভর জনপদ এখন এক বুক হাহাকার নিয়ে দাঁড়িয়ে। মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানের চারা পানির নিচে বিলীন, যেন কৃষকের স্বপ্নগুলোও একই সাথে তলিয়ে গেছে অথৈ পানিতে ।

যে ধানগাছের বেড়ে ওঠায় কৃষক ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনেছিলেন, যেই ফসল ঘরে তোলার আশায় বুক বেঁধেছিলেন, সেই কষ্টের ফসল আজ চোখের সামনেই নষ্ট হতে চলেছে। বহু পরিশ্রমে ফলানো ধানের চারাগুলো যখন সবেমাত্র বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে বড় হচ্ছিল, ঠিক তখনই নেমে এলো এই মহাবিপর্যয়। কৃষকের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা কষ্টের ফসল এভাবে পানির তোড়ে ভেসে যেতে দেখে তাঁদের চোখে এখন কেবলই অন্ধকার।

এই বিপর্যয় শুধু ধান খেতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। রংপুরের অসংখ্য পুকুর এবং মাছের ঘের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। পুকুর উপচে মাছ ভেসে যাওয়ায় মৎস্যজীবীরাও হয়ে পড়েছেন দিশেহারা। তাঁদের সারা বছরের জীবিকা চোখের নিমিষেই হারিয়ে গেছে। এমনকি, অনেক কৃষকের বাড়িতে যত্ন করে তুলে রাখা শুকনো ধানও বৃষ্টির পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে, যা তাঁদের দুর্গতির মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ রংপুরের আপামর কৃষকের জীবনে এক ভয়াবহ বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। তাঁদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা শ্রম, তাঁদের স্বপ্ন, সবই যেন মুহূর্তের মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই চরম দুর্দিনে আমরা রংপুরের সকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মৎস্যজীবীর প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। মহান আল্লাহর কাছে আমাদের একান্ত প্রার্থনা, তিনি যেন তাঁদের এই কঠিন সময় থেকে রক্ষা করেন এবং এই অপূরণীয় ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার শক্তি ও সাহস দান করেন। (আমিন)


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন