উত্তর বাংলা ২৪বিডি ডেস্কঃ
শীতের এই সময়ে অধিক পাওয়া যায় ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, গাজর, শিম, টমেটো, পেঁয়াজ পাতা, মটরশুঁটি, বিভিন্ন শাক, ব্রকোলি ইত্যাদি। ঠাণ্ডা মৌসুমে এসবের স্বাদ উদাহরণসরূপ বহু থাকে, তেমনি পুষ্টিগুণও থাকে বেশি। শীতকালীন এ রকম কয়েকটি শাক-সবজির পুষ্টিগুণ নিয়ে আলোচনা করেছেন পুষ্টিবিদরা...
ফুলকপি:ফুলকপিতে আছে ‘সালফোরাফোন’ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে হেল্প করে। এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
এই সবজিতে প্রচুর ভালো হিসাবে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্যসহ পেটের নানা প্রবলেম মুছে করে। এই অন্ন ওজন কন্ট্রোলে বেশ কার্যকর। এতে থাকা কোলিন মস্তিষ্কের বিকাশে হেল্প করে। গর্ভবতী মা তার সাথে আলঝেইমার রোগীদের জন্য এটি প্রচণ্ড উপকারী।
কিডনি বিকলও প্রতিরোধ করে। যাঁরা ত্বক সুন্দর রাখতে চান, তাঁরা রেগুলার ফুলকপি খেতে পারেন।
বাঁধাকপি:
প্রচুর হিসাবে ফাইবার থাকায় এবং ক্যালরি অনেক কম থাকায় ওজন কমাতে বাঁধাকপির জুড়ি নেই। এতে ভিটামিন ‘সি’ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, রক্তস্বল্পতা রোধ করে, কেশ কোমল ও মসৃণ করে ও ত্বকের প্রখরতা বাড়ায়। এতে অনেক সালফার থাকায় টক্সিন বের করে শরীরকে ডিটক্সিফাই করে। ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়াম হিসাব অধিক থাকায় রেগুলার বাঁধাকপি খেলে হাড় অটুট হয়। এ ছাড়া বাঁধাকপিতে থাকা অনেক বিটা ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহযোগিতা করে।
গাজর:
গাজর খেলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
যাঁরা রেগুলার গাজর খান ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ও ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। গাজরে থাকে ফাইবার, যা হজমক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বয়সের ছাপ মুছে করে, ত্বককে করে দীপ্ত আর লাবণ্যময়। এতে পটাসিয়াম থাকে, যা রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখে। বর্জ্যপদার্থ নিষ্কাশন করে লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়াতে গাজর বেশ উপকারী। এ ব্যতীত হার্ট সুস্থ রাখতে, কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে রোজকার অন্ন তালিকায় রাখার জন্য পারেন গাজর।
মুলা:
মুলায় প্রচুর কম হিসাব ক্যালরি থাকে যাতে দীর্ঘ সময় পেট ভরার অনুভূতি জাগায়। যাঁরা ওজন কমাতে চান, জন্য এটি বেশ বেশ ভালো খাবার। এতে রয়েছে ভিটামিন ‘সি’, জিংক ও ফসফরাস, যা ব্রণজনিত প্রবলেম দূর করে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া তার সাথে র্যাশ ওঠা হতে সুরক্ষা দেয়। মুলায় পর্যাপ্ত জল থাকায় শরীরকে হাইড্রেট হওয়া থেকে রক্ষা করে। হার্ট সুন্দর রাখতে, হজমশক্তি বাড়াতে, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিতে, এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধও করে থাকে এই মুলা।
ব্রকোলি:
শীতকালীন সবজি হিসেবে ব্রকোলি আজকাল দেশেও চাষ করা হচ্ছে। ব্রোকলিতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় আয়রন ও ক্যালসিয়াম বিদ্যমান। এটা চোখের রোগ, রাতকানা, অস্থি বিকৃতি প্রভৃতির উপসর্গ মুছে করে ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
শিম:
শিমে বিদ্যমান ভিটামিন ‘এ’, যা দৃষ্টিশক্তি বেশ ভালো রাখে। এই খাবারে বেশি আঁশ রয়েছে বিধায় কোষ্ঠকাঠিন্য মুছে করে। এতে থাকা খনিজ পদার্থ কেশ পড়া রোধে সাহায্য করে, ত্বক বেশ চমৎকার রাখে। এতে রয়েছে অনেক সংখ্যা প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন আর মিনারেল। যাঁরা প্রাণিজ আমিষ অর্থাৎ মাছ, মাংস টার্গেট না করে চলেন—শিমের বিচি দরকারী প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারে। সর্বোপরি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধেও এই অন্ন বেশ কার্যকর
টমেটো:
ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’র এক অনন্য সোর্স টমেটো। এতে বিদ্যমান অনেক মেজারমেন্ট ‘লাইকোপেন’, যা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি, এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধেও কাজ করে। রেগুলার টমেটো খেলে ত্বক উদ্ভাসিত থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য কমে, পাকস্থলী ও নাড়ি সুস্থ-সবল থাকে। যাঁরা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তাঁরা ডেইলি সুবিশাল মাপের একটি পাকা টমেটো রেগুলার খেলে বেশ কৃপা পাবেন। গর্ভবতী ও সদ্যোজাত সন্তানের মায়েদের কর্তব্য নিয়মিত টমেটো খাওয়া। কেননা শরীরিক ও মানসিক শক্তি বাড়তে টমেটো বেশ কার্যকর। এ ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের প্রবলেম মুছে করতে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে, হৃদরোগ ও শীর্ষ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই খাবারের জুড়ি নেই।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন