মোঃ সুজা উদ্দিনঃ
![]() |
একসময় গরু, লাঙ্গল, জোয়াল ও মইয়ের প্রচলন ছিল অনেক বেশি। গ্রামের কৃষকেরা কাক ডাকা ভোর হতেই কৃষি জমিতে হাল জুড়ে দিত। অনেক সময় সূর্য উঠার আগেই জমিতে হাল দেওয়ার কাজ শেষ করতো কৃষক। যারা জমিতে হাল দেওয়ার কাজ করতো, তাদেরকে স্থানীয় ভাষায় বলা হতো হালুয়া।
যদিও সময়ের ব্যবধানে, এগুলো এখন প্রায় রুপকথার গল্পর মত। আধুনিক এই যুগে, নানা রকম কৃষি যন্ত্রপাতি দিয়ে কৃষি কাজ করা হলেও জমিতে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের দৃশ্য বলা চলে একটু ভিন্ন রকম।
এমনি এক দৃশ্যের দেখা মেলে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নে।
ইউনিয়নের একডলা গ্রামের কৃষক মোঃ তবারক আলী, তিনি ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করছেন বোরো ধানের জমিতে ।
ঘোড়া দিয়ে জমি চাষের পাশাপাশি তিনি, ঘোড়ার গাড়ি দ্বারা কৃষি পণ্য বহনের কাজ অনায়াসে সেরে নেন ।
কৃষক তবারক আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় , এক সময় তার গরু মহিষের হাল ছিল, অভাব অনটন ও বিভিন্ন কারণে সেগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি।
তারপর তিনি দুইটি ঘোড়া মাত্র চব্বিশ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেন । এরপর ঘোড়া দুটিকে , জমি চাষ এবং গাড়ি টানার জন্য প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন ।
এক সময় তার ঘোড়া দুটি , জমি চাষ এবং গাড়ি টানার জন্য উপযুক্ত হয়ে যায় । তারপর থেকে তিনি তার নিজস্ব কৃষি জমিতে, নিয়মিত ঘোড়া দিয়ে চাষের কাজ সেরে নিচ্ছেন ।
তিনি আরো জানান, পাওয়ার টিলার কিংবা গরু মহিষের চেয়ে ,ঘোড়া দিয়ে এ ধরনের কাজ অনেক ভালোভাবেই হচ্ছে। সেই সঙ্গে অর্থের ও অনেক সাশ্রয় হচ্ছে । বর্তমান যুগে, ভালো ধরনের একজোড়া গরু কিংবা মহিষ ক্রয় করতে গেলে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করতে হবে । অপরদিকে ঘোড়াতে সামান্য টাকা বিনিয়োগ করলেই হয়ে যায়।
বড়বালা ইউনিয়নে তবারক আলীর ঘোড়া ছাড়াও আরো কয়েকজন কৃষকের ঘোড়া রয়েছে বলে জানা গেছে। তারাও ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ কিংবা গাড়ি টানার কাজ করে ।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, কৃষির প্রতি কৃষকের আগ্রহ থেকে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করছেন তারা । তবে বিষয়টি অনেক চমকপ্রদ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন