উত্তরবাংলা ২৪বিডি ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সরকারের বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত রোডমার্চ চলবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রংপুরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপির কার্যালয়ে সম্মুখে টিমের পূর্বঘোষিত তারুণ্যের রোড মার্চ’ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে তিনি বলেছেন, আজ রোড মার্চ শুরু হলো। এ কর্মসূচি সেদিন সমাপ্ত হবে, যেদিন এ গর্ভনমেন্টের অবনতি ঘটবে।
তিনি বলেন, এই রংপুরের একটা বিরাট পরম্পরায় চলে আগত আছে। সেই ঐতিহ্য হচ্ছে অন্যায়ের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ানোর। ব্রিটিশ আমলে রংপুর নূরলদীন ছিলেন একজন কৃষিজীবী নেতা (নূরউদ্দীন মোহাম্মদ বাকের জং)। ব্রিটিশদের বিপক্ষে সেদিন নূরলদীন ডাক দিয়ে ছিলেন জাগো বাহে কোনঠে সবাই।
আজ তরুণরা বাংলাদেশের মানুষকে ডাক দিচ্ছে, এই ভয়াবহ একনায়কতন্ত্র স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদ, লুটেরা-তাদের বিরুদ্ধে রুখে নূরলদীনের এই রংপুর হতে রুখে দাঁড়াবার ডাক আসছে।
ফখরুল বলেন, এই রোডমার্চ চালু হল, যেদিন এই গর্ভনমেন্টের অধোগতি হবে সেদিন শেষ হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোকাস করে উনি বলেন, আমাদের দাবি ক্লিয়ার পদত্যাগ করেন, আপনাকে দেশের আর দেখতে চায় না। আপনি সংসদ বিলুপ্ত করেন, নির্দলীয় অনাসক্ত রাষ্ট্রের অধীনে নির্বাচন দেন, নিঃসম্পর্ক নির্বাচন ডিস্কাউন্ট আকার করার জন্য হবে। সেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে। জনগণ অংশগ্রহণ করবে, যাকে সন্তুষ্ট তাকে ভোট দিয়ে নিউ পার্লামেন্ট গঠন করবে, নতুন বাংলাদেশ আকৃতি করবে।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, ইলেকশনের পরে ৩১ দফার ভিত্তিতে জাতীয় রাষ্ট্রশাসক বিভাগ আকৃতি করা হবে।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে আজ লাখ লাখ অংশ নিচ্ছে। এই জনগণের উত্তাল তরঙ্গে এই ভেসে যাবে। জনগণের রাষ্ট্রশাসক বংশ প্রতিষ্ঠিত হবে।
এর আগে, বেলা সোয়া ১১ টায় এই রোডমার্চ রংপুর হতে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এই রোডমার্চের নেতৃত্বে রয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে রয়েছেন তিন সংগঠনের শীর্ষ ছয় নেতা।
তারা হলেন-যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান এবং ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও সাধারণ এডিটর সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
এই রোডমার্চে পথে রাস্তায় অংশ নিচ্ছে রংপুর বিভাগের নানারকম পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
রোডমার্চের উদ্বোধন করার জন্য গিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ ইলেকশন দিয়ে তাদের নিজেদের নির্বাচন করার জন্য পারে না।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের ব্যক্তি কেবল হয়ে পড়েছে দ্রব্যমূল্য নিয়ে। চাল, ডাল, লবণ, তেল, বিদ্যুতের দামসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বিদ্যুৎও পায় না। দুর্নীতি করে সব কয়েকটি প্রবাসে পাচার করে দিচ্ছে। দেখবেন, রিজার্ভ ক্ষয় পায় যাচ্ছে। রিজার্ভ তো তারা চুরি করছে। অর্থনীতির চাকা ঘুরপাক খাচ্ছে না।
ফখরুল বলেন, এই তরুণরা বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা সূয্যি সন্তান, তাদের চাকরি নেই। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে গেলে বিএনপির নাম-গন্ধ থাকলেও সেটি করতে পারে না।
এসময় গত একমাসের বেশি টাইম ধরে রাজধানীর এভার কেয়ার ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শুক্রবার রাতেও ডাক্তারখানায় গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলাম। উনি বেশি অসুস্থ। ওই স্থান চিকিৎসকরা সবাই (মেডিকেল বোর্ড) এসছিলেন। তারা অতিশয় চিন্তিত; দেশনেত্রী বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই দেশের নিকট তার পরিজন থেকে এবং আমরা বলছি, তাকে প্রবাসে সার্ভিস করার জন্য। তা সত্ত্বেও রাষ্ট্রশাসক ক্যাটাগরি তা শুনছে না। অথচ, তারা নিজেরা, তাদের চিকিৎসার জন্য বারবার প্রবাসে যায়।
তিনি বলেন, ১/১১ তে এই প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) তখন বন্দি ছিলেন। প্যারোলে তিনি প্রবাসে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। সেই তিনিই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রবাসে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছেন না।
গত ১৫ সালের এই রাষ্ট্রশাসক বংশ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে ফেলেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘ যাকে আমরা গণতন্ত্রের মাতা বলি। যে মহীয়সী নেত্রী, তাকে ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে তাকে সাজা দিয়ে কারান্তরীন করা হয়েছিল। কিছু দিন আগে উনি গৃহবন্দি। অথচ, দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করে কান্ট্রিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা জনরব মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের বেশি নেতাকর্মীকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের জামিন দেয়া হয় না।
(তথ্য ও পিকচার সংগ্রহীত)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন