ওযু ভঙ্গের ৭টি কারণ কি কি জেনে নিন

উত্তর বাংলা ২৪বিডি ডেস্কঃ


নামাজের পূর্বশর্ত ওযু করা। ওযু ছাড়া নামাজ আদায় করলে সেই নামাজ হবে না। এবং সুন্দরভাবে ওযু করার গুরুত্ব, সওয়াব ও ফজিলত বেশি বেশি। অতএব পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার পূর্বে অবশ্য  ওযুকরার চেষ্টা করবেন। অনেকেই একবার ওযু করে এক অথবা দুই ওয়াক্তের নামাজ পড়েন। এ সময়ে নানান কার্য করতে হয়। অনেক সময় এসব কাজের মধ্যে কোন সময় ওযু ভেঙে গেছে, সেটা বোঝা যায় না। এ জন্য কী ফলস্বরূপ ওযু ভাঙে আর সেগুলো কী কী, তা জেনে রাখা জরুরি। একনজরে দেখে নেওয়া যাক কারণগুলো-

ওযু ভঙ্গের কারণ-১

পায়খানা ও প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন—বায়ু, প্রস্রাব-পায়খানা, পোকা প্রভৃতি (হেদায়া, হাদিস : ১/৭)। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাজের জন্য উঠো, সেসময় স্বীয় মুখমণ্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত করো আর পদযুগল গিটসহ। যদি তোমরা অপবিত্র হও, তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও আর যদি তোমরা রুগ্ণ হও, বা প্রবাসে থাকো বা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে বা তোমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাস করো, অতঃপর জল না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দিয়া তায়াম্মুম করে নাও, অর্থাৎ স্বীয় মুখমণ্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দিয়া মুছে ফেল। প্রভু তোমাদের অসুবিধায় ফেলতে চান না, কিন্তু তোমাদের পবিত্র রাখতে চান আর তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পুরা করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ০৬ )

ওযু ভঙ্গের কারণ-২

রক্ত, পুঁজ অথবা জল বের হয়ে গড়িয়ে পড়া (হেদায়া : ১/১০)। এ বিষয়ে হাদিসে আসছে যে, আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ত, সেসময় উনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস : ১১০)

ওযু ভঙ্গের কারণ-৩

মুখ ভরে বমি করা। এ বিষয়ে আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। উনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির বমি হয় বা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে অথবা মজি (সহবাসের পূর্বে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নেবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১২২১)

ওযু ভঙ্গের কারণ-৪

থুতুর সাথে রক্তের ভাগ সমান অথবা প্রচুর হওয়া। এ বিষয়ে হাসান বসরি (রহ.) বলেন, যে মানুষ তার থুতুতে রক্ত দেখে, তাহলে থুতুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৩৩০)

ওযু ভঙ্গের কারণ-৫

চিত অথবা কাত হয়ে ঘুমানো। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিত হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙে যাবে, কেননা চিত অথবা কাত হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়।’ [ফলে বাতকর্ম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে] (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩১৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০২)

ওযু ভঙ্গের কারণ-৬

পাগল, মাতাল অথবা অচেতন হলে। এ বিষয়ে হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল মানুষ সুস্থ হয়, সেসময় নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৯৩)

ওযু ভঙ্গের কারণ-৭

নামাজে উচ্চ স্বরে হাসলে। এ বিষয়ে ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে মানুষ নামাজে উচ্চ স্বরে হাসে, সে মানুষ অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। এ ছাড়া হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো মানুষ উচ্চ স্বরে হাসি দেয়, সে মানুষ অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে।’ (সুনানে দারা কুতনি, হাদিস : ৬১২

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন