বড়বালা ইউনিয়নের নামকরণ, ইতিহাস ও ঐতিহ্য

মোঃ সুজা উদ্দিনঃ

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১১নং ইউনিয়ন'টি বড়বালা ইউনিয়ন নামে পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী ছড়ান হাটে এই ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদটি অবস্থিত।

যোগাযোগঃ

মিঠাপুকুর উপজেলা সদর হতে ২০কি.মি. পশ্চিমে, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে অবস্থিত শঠিবাড়ী হতে ১৮কি.মি পশ্চিমে, স্বপ্নপুরী হতে ০৮ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরে
১১নং বড়বালা ইউনিয়নের অবস্থান।
পূর্বে বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন, উত্তরে বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানী পাড়া ইউনিয়ন, দক্ষিণে মিলনপুর ইউনিয়ন, এবং পশ্চিমে দিনাজপুর জেলার  কুশদহ ইউনিয়ন।
রংপুর, দিনাজপুর ও গাইবান্ধা এই তিন জেলার সংযোগস্থলে যমুনেশ্বরী নদীর তীরবর্তী সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা, পলি, দোঁআশ, এঁটেল, লাল ও বালু মাটিতে অবস্থিত ১১নং বড়বালা ইউনিয়ন।

নামকরণের ইতিহাসঃ

বড়বালা নামের উৎপত্তি  খুব সম্ভবত  মধ্যযুগে। তৎকালীন অত্র ইউনিয়ন মোটা বালুর জন্য বিখ্যাত ছিলো। নদী বেষ্টিত এলাকাজুড়ে বালুর চরে বিস্তৃত। অধিকন্তু বর্তমান বড়বালা ইউনিয়নের পূর্ব বড়বালা ও পশ্চিম বড়বালা মৌজাদ্বয় দ্বারা যথাক্রমে ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড গঠিত। খুব সম্ভবত, উক্ত মৌজাদ্বয়ের নামানুসারে ইউনিয়নটির নামকরণ করা হয় বড়বালা ইউনিয়ন।

হাট-বাজার সমূহঃ

ইউনিয়ন'টির ঐতিহ্যবাহী হাট হচ্ছে  ছড়ান হাট। বলা চলে রংপুর জেলার মধ্যে স্বনামধন্য ও ঐতিহ্যবাহী হাট ছড়ান হাট। প্রায় ৫.৪০ একর জমির উপরে অবস্থিত এ হাটে সকল প্রকার নিত্যপণ্য দ্রব্য সহজেই পাওয়া যায় এবং বাহিরে রপ্তানি করা হয়।
এ ছাড়াও এই ইউনিয়নে আরও দুইটি হাট-বাজার রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে কেশবপুর হাট-বাজার  ও গুটিবাড়ি হাট-বাজার।

আয়তন ও জনসংখ্যাঃ

বড়বালা ইউনিয়নের আয়তন প্রায় ২৪ বর্গ কিলোমিটার। ১৪টি মৌজা নিয়ে গঠিত এ বড়বালা ইউনিয়নের জনসংখ্যা-২৮,৪৬৬জন (২০২১ সালে ভোটার তালিকা অনুযায়ী) তন্মধ্যে পুরুষ-১৪,১০০ জন, মহিলা-১৪,৩৬৬ জন।
ইউনিয়ন পরিষদের ৩ কি:মি: পশ্চিমে ঘিরনাই নদী প্রবাহমান,যাহা দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার সাথে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলাকে পৃথক করেছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহঃ

বড়বালা  ইউনিয়নে ১টি ডিগ্রি কলেজ, ১টি ফাজিল মাদ্রাসা ও ১টি কারিগরি কলেজ আছে। ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (সহশিক্ষা), ১টি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ১টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি আলিম মাদ্রাসা, ১টি দাখিল মাদ্রাসা, ১৪টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, ও ৪টি হাফেজিয়া মাদ্রাসা অবস্থিত।
শিক্ষার হার প্রায় ৭৫ শতাংশ।
সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও এই ইউনিয়নে রয়েছে অসংখ্য ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

মসজিদ ও মন্দির সমূহঃ

বড়বালা ইউনিয়নে ৭০ টি মসজিদ এবং ৭ টি মন্দির  অবস্থিত। 

মুক্তিযোদ্ধা গনঃ


১। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল বাকী,২। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল হোসেন ৩। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহজাহান মিয়া, ৪। বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রী অনিল চন্দ্র মহয়, ৫। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আক্কাছ আলী, ৬। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মকবুল হোসেন। 


ব্যাংক ও এনজিও সমূহঃ

একটি গ্রামীন ব্যাংক, ৩টি এজেন্ট ব্যাংক সহ আশা, ব্র্যাক, টি,এম,এম,এস, ও অন্যান্য এনজিও-র মাধ্যমে কোটি  টাকার লেনদেন প্রতিদিন এখানে হয়ে থাকে।

স্বাস্থ্য কেন্দ্র সমূহঃ

বড়বালা ইউনিয়নে ১টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্র, ১টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে যার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন। 

অলাভজনক সংগঠন সমূহঃ

এস,এম সমাজ কল্যাণ যুব সংঘ সহ অসংখ্য অলাভজনক সংগঠন এই ইউনিয়নে রয়েছে।

কৃষি চাষাবাদঃ


বড়বালা ইউনিয়নে ধান,ভুট্টা, আখ,পাট,বরই,কলা, শাক-সবজি সহ বিভিন্ন রকম কৃষি পণ্য  চাষাবাদ হয়। 

দর্শনীয় স্থান সমূহঃ

নদী বেষ্টিত বড়বালা ইউনিয়ন। নদীর দুই ধার ভাদ্র-আশ্বিণ মাসে সাদা সাদা কাঁশফুলে ভরে যায়, যা দেখে সবার মন প্রাণ ভরে যায়। যমুনেশ্বরী ব্রিজ হইতে পূর্ব দিকে কিংবা পশ্চিম দিকে তাকালে যেন বার বার দেখার ইচ্ছা জাগে মনে। 

উপসংহারঃ

সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি এই বড়বালা ইউনিয়ন। অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল। এখানে যদিও তেমন কোন দর্শনীয় স্থান নেই তবে যদি এখানে সরকারী ভাবে নদীর কোন একটি চরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা যায় তবে এখানেও হতে পারে পর্যটকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করবার মতো মনোরম জায়গা। 

ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোষ্টটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য। 


এখনো অনেক তথ্য সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আপডেট করা হবে ইনশাআল্লাহ । 
 যে কোন ভুল ভ্রান্তি ধরিয়ে দেবেন, সংশোধন করা হবে। 

তথ্য সূত্রঃ
বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন,
বড়বালা ইউনিয়ন। https://borobalaup.rangpur.gov.bd/

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন