সংকট উত্তরণে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনে জোর প্রধানমন্ত্রীর

উত্তর বাংলা ২৪বিডি ডেস্কঃ


চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্যাঁচ মোকাবিলায় ইন্টারন্যাশনাল আর্থিক অ্যারেঞ্জমেন্ট পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর  আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে স্থানীয় টাইম মঙ্গলবার এক গোলটেবিল বৈঠকে এই  আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘টুওয়ার্ডস এ ফেয়ার আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল-আর্কিটেকচার’ শীর্ষক এ বৈঠকের আয়োজন করে স্পেন ও ইউরোপীয় কাউন্সিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে একমত– বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম নিশ্চয়ই পর্যালোচনা করা উচিত। সাম্প্রতিক রেটিং সিস্টেম প্রচুর নিম্ন ও মধ্যম ইনকামের রাষ্ট্রের জন্য ফান্ডের সুবিধাকে এইরকম সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রায়ই ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক ফাইন্যান্সগুলোকে অনেক দামী ও নাগালের বাইরে দেখতে পাই। ঋণের সংকট এড়াতে উচ্চ-সুদের ঋণ হতে সরে থাকার ট্রাই করি। বাংলাদেশ কখনোই এর ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি। আমরা সেই রেকর্ড বজায় রাখার প্রার্থনা করি।’

আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল-আর্কিটেকচারের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক তার সাথে গ্লোবাল সাউথের প্রতিনিধিত্ব করা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রের অগ্রগতি বিবরণী দেখায় যে, আমরা অংশ করতে পারি। ইন্টারন্যাশনাল আর্থিক ব্যবস্থার জন্য আমাদের প্রত্যাশার প্রতি সায় দেয়ার টাইম এসেছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা কবুল করি– আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল-আর্কিটেকচারের তাৎপর্যপূর্ণ পাল্টানো প্রয়োজন। তা সত্ত্বেও পরিবর্তনের চেহারা ও পরিধির ব্যপারে অ্যাগ্রিমেন্টের ক্ষেত্রে এখনও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ। ১টি মৌলিক পাল্টানো প্রয়োজন।’

এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেন। ১ম প্রস্তাবে তিনি বলেন, এমডিবি, আইএফআই এবং বেসরকারি ঋণদাতা সংস্থাগুলোকে তাদের অগ্রাধিকারগুলো পুনরায় সাজাতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়ন ও জলবায়ু বদলানোর সমস্যা মোকাবিলার জন্য অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করার জন্য হবে।

দ্বিতীয়ত তার সাথে তৃতীয় দফা সম্মন্ধে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর জন্য স্বল্প ব্যয়ে, রেয়াতি হারে ফান্ডের পর্যাপ্ততা প্রয়োজন। পছন্দসই উচ্চমানের ব্যাপক সংখ্যায় অনুদান ও সব ঋণদানের উপকরণগুলোয় দুর্যোগের বিধান থাকতে হবে যাতে অক্ষম দেশগুলো সংকটকালের ধকল সামলাতে পারে।

চতুর্থ দফা সম্মন্ধে তিনি বলেন, ঋণদাতাদের মধ্যে বিশুদ্ধতা ও সমন্বয়ের ভিত্তিতে উপযুক্ত ও কার্যকর দেনা হিসেবে ত্রাণব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

পঞ্চম তার সাথে সমাপ্ত প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটার পরিবর্তে এসডিআর ঋণের সীমা প্রয়োজন তার সঙ্গে সীমাবদ্ধতার ভিত্তিতে সহজ দেনা পদ্ধতির মাধ্যমে হওয়া উচিত।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে তার সুষ্ঠু সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য সুনাম কুড়িয়েছে। মহামারির ঠিক প্রথমে আমাদের অর্থনীতি ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। স্বাস্থ্য, জীবনযাত্রার খরচা এবং জলবায়ু ঘাপলা আমাদের অর্থনীতিকে চাপের মধ্যে ফেলেছে। সতর্কতামূলক আয়োজন হিসেবে বাংলাদেশ আইএমএফের সাথে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দেনা প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, লেনদেনে ভারসাম্য তার সঙ্গে আমাদের উন্নয়ন ব্যয় বজায় রাখার ট্রাই করছি। আমাদের দারিদ্র্যের হার ৪১.৯ থেকে ১৮.৭ শতাংশে তার সাথে চরম দারিদ্র্যের মাত্রা ২৫.৫ হতে ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।’

এ সভা ইনভাইট করায় শেখ হাসিনা স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান। 

এ সময় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) থিমেটিক অ্যাম্বাসাডর সায়মা ওয়াজেদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইহাকে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন।


(তথ্য সূত্র সংগ্রহীত)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন