বগুড়া হতে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত ৮৪ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আগামী জাতীয় ইলেকশনের আগেই এ রেলপথ প্রস্তুত হবে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। উনি বলেন, ‘প্রকল্প এলাকার অ্যাডভান্টেজ ও অসুবিধা দেখতে আমি এইখানে এসেছি। প্রকল্পের কয়েকটি জটিলতা ছিল। অধুনা আর কোনো জটিলতা নেই। আগামী জাতীয় ইলেকশনের আগেই এ রেলপথ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হবে।’ প্রকল্প পরিদর্শনে এসে শনিবার সকাল ১১টার দিকে বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিকদের এ ইনফরমেশন জানিয়ে দেন তিনি। রেলমন্ত্রী জানান, এ রেলপথে ব্রিজ, ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস নির্মাণের জায়গা নিয়ে কাজ শুরু করেছে প্রকল্প পরামর্শকরা। রেলপথ যাচাইয়ে ফাস্ট চূড়ান্ত ডিসিশন নেয়া হবে।
এ সময় ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় এই প্রকল্পে সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হওয়ার কথাও জানান রেলমন্ত্রী। জানা গেছে, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে নিমিত্ত রুট ধরা হয়ে গিয়েছে ৭২ কিলোমিটার। বগুড়ার রানীরহাট এলাকা হতে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত এ রুট। এ প্রকল্পের আওতায় ডুয়েল গেজের দুইটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা হয়েছে। এছাড়া বগুড়ার কাহালু স্টেশন হতে রাণীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারসহ মোট ৮৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথ প্রস্তুত হবে। বগুড়া হতে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে রাণীরহাটে ১টি জংশন প্রস্তুত করা হবে। একসাথে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রুটে শেরপুর, চাঁন্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, কৃষাণদিয়া ও সদানন্দপুর স্টেশন স্থাপন করা হবে। প্রবর্তিত এ রেলপথের জন্য ৯৬০ একর কৃষিখেত অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর ভিতরে বিদ্যমান বগুড়ার ৫২ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৫১০ একর তার সাথে সিরাজগঞ্জের ৩২ কিলোমিটারের জন্য ৪৫০ একর জমি। এ রেলপথ চালু হলে ঢাকার সঙ্গে বগুড়ার রেলপথের দূরত্ব ১১২ কিলোমিটার কমবে। একই সাথে ভ্রমণে অন্তত তিন ঘণ্টা সময় কম লাগবে। ২০১৫ বর্ষের ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়ার আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে এক জনসভায় বগুড়া-সিরজাগঞ্জ রেলপথ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৭ বর্ষের ৪ অক্টোবর ঢাকায় ইন্ডিয়ার সাথে যোগাযোগ অবকাঠামো ও তড়িৎ খাতের উন্নয়নে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৩য় ক্রেডিট লাইনে দেনা দেওয়ার জন্য সম্মত হয় দেশটি। এরপর প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রজেক্ট প্রোফাইল প্রণয়ন, চিত্র তৈরি, স্টেশনের পরিমান সিলেক্ট ও ভূমির ভ্যালু নির্ধারণের কাজ চালু হয়। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেক সভায় প্রকল্প অ্যাপ্রুভ দেয়া হয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন